Facebook ব্যবহার কি খারাপ ? মোটেও না। বর্তমান যুগ হল তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। এই যুগে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ইতিমধ্যে মানুষের ভিতরে একটি বিশাল সেতু বন্ধ রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। কর্মব্যস্ত এই জগতে আজকের মানুষ সামাজিকভাবে আগের মত ওঠা বসা, চলাফেরা, আড্ডা দেওয়া, গল্প করা সরাসরি সশরীরে উপস্থিত থেকে সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের এই ক্রমবর্ধমান সামাজিক চাহিদা মিটানোর জন্যই মূলত এই সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যমগুলি মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে।
তাহলে আজকের আলোচ্য বিষয় ফেসবুক এর নেশা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া। এটার কি প্রয়োজন ? ইংরেজিতে প্রবাদ আছে, Excess of anything is bad.
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক এমন একটি অবস্থা তৈরি করেছে, ফেসবুকের নানান বৈচিত্রময় প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনা মানুষকে এতটাই নেশাসক্ত করে ফেলেছে যে, প্রয়োজন ছাড়াও মানুষ এখানে সময় ব্যয় করছে ঘন্টার পর ঘন্টা ।এমনকি সারারাত।
এখানেই মূলত সকলের আপত্তি। একজন স্বাভাবিক চিন্তার মানুষের কাছে ফেসবুক ততটুকু প্রয়োজন ঠিক যতটুকু ব্যবহার করা যুক্তি সংগত।
অযৌক্তিক নেশা থেকে মুক্তির উপায়:
এটার সূত্রটি হল--Replace অর্থাৎ প্রতিস্থাপন।
ধরন প্রেমিকা চলে গেছে, দ্রুত নতুন একজনকে ম্যানেজ করে ফেলতে হবে।
অ্যান্ড্রয়েড সেট হারানো গিয়েছে, দ্রুত নতুন সেট ব্যবস্থা করে ফেলতে হবে।
অর্থাৎ একটি নেশা থেকে অব্যাহতি পেতে হলে আরেকটা কিছুর প্রতি আসক্তি তৈরি করে ফেলতে হবে।
Step - 1: বাছাই করা,
আপনি যে বিষয়টি প্রতি নতুন আসক্তি তৈরি করতে চান সেটা বাছাই করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, কোরআন তেলাওয়াত করা।
Step - 2: ভালোলাগা,
প্রথম প্রথম ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তেলাওয়াত করতে হবে। হয়তো তেমন ভালো লাগবে না। কিছুদিন যাওয়ার পরে দেখবেন ভালো লাগতে শুরু করবে।
Step - 3: ভালোবাসা,
কিছুদিন পরে লক্ষ্য করবেন, আপনি যদি কোরআন তেলাওয়াত না করেন, আপনার ভিতরে একটু অস্থিরতা কাজ করতেছে। বোঝা গেল তেলাওয়াতের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে।
Step - 4: আসক্তি,
আরো কিছুদিন পরে লক্ষ্য করবেন, ঠিক ফেসবুকের প্রতি যেরকম একটা তীব্র আকর্ষণ ছিল, তেলাওয়াতের প্রতি তেমনি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। যত গুরুত্বপূর্ণ কাজই থাকুক না কেন সবকিছু উপেক্ষা করে দ্রুত এক অদ্ভুত অনুভূতি আপনার ভিতরে কাজ করছে যা অপ্রতিরোধ্য।
প্রিয় পাঠক, আমরা সাধারণত আমাদের অধীনস্থদের কে শাসন করে থাকি। কিন্তু প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করার তোয়াক্কাই করি না। যেকোনো বিষয়ের একটি পদ্ধতি থাকে। আমি ছোটবেলা থেকে লক্ষ্য করেছি সমাজের মানুষগুলো জোর করে কাঁঠাল পাকানোর চেষ্টা করে। এতে হিতে বিপরীত হয়।
সাধনা ছাড়া কিছুই হয় না। সন্তান লালন পালন, স্ত্রীকে নিজের আদর্শে গড়ে তোলা, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ভিতরে পড়ালেখার প্রতি আসক্তি তৈরি করা, সবকিছুর মূলেই প্রক্রিয়াটি দারুণভাবে কাজ করে। এর বিপরীতে গেলেই, যত বিপত্তি তৈরি হয়। তৈরি হয় মানসিক বিকৃতি, গুরুজনদের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং ঘৃণা।
যার পরিণতি হল ভালোবাসা হীন জীবন। স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রমে।
1 Comments
খুব সুন্দর হয়েছে আপনার পোষ্টটি
ReplyDelete