আসলে কম ঘুম বলতে কোন কথা নাই । ঘুম যদি কম হয়, তাহলে আপনার বডির ফিটনেস ঠিক থাকবে না।
ঘুম আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত একটি নেয়ামত। ঘুম হওয়া খারাপ কিছু নয়। তবে ঘুম এবং খাওয়া যত বাড়াবেন ততই বাড়বে।
কম ঘুমিয়ে কি সুস্থ থাকা যায় ?
এক্ষেত্রে যারা কম ঘুমান তাদের জন্য আমার বক্তব্য হলো, আপনি কয় ঘন্টা ঘুমাবেন সেটা আগে ঠিক করুন। চিকিৎসকগণ বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ঘুম ৬ ঘন্টা। রাত দশটায় যদি আপনি ঘুমিয়ে যান তাহলে ভোর চারটা পর্যন্ত ঘুমালেই আপনার শরীরের চাহিদা পূরণ হয়ে যাওয়ার কথা।
ঘুমের সাইকেল বা চক্রঃ
উল্লেখ্য যে ঘুমের একটি সাইকেল রয়েছে। আপনি প্রথম যখন ঘুমান, ঘুমিয়ে একটা পর্যায়ে যখন খুব গভীরে চলে যান, তখন আপনার আর চেতনা থাকেনা । কিন্তু এই গভীরতা থেকে আস্তে আস্তে আবার আগের জায়গায় চলে আসে তখন মানুষ একটু নড়াচড়া করে । ওই সময়ে উনি যদি শয্যা ত্যাগ করেন তখন উনার কিন্তু শরীর আরাম বোধ হবে।
ধরুন আপনি ভোর চারটার সময় ঘুমের সাইকেল শেষ করলেন এখন যদি ওই সময়ে শয্যা ত্যাগ না করেন তাহলে ঘুমের আরেকটি সাইকেল তৈরি হবে। এইটা আবার শেষ হইতে দেখা গেল আটটা, নয়টা বা দশটা বাজতে পারে।
তাহলে আপনার কাজ হল, ঘুমের সাইকেলটি যখন শেষ হবে তখন শয্যা ত্যাগ করা। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কেন শয্যা ত্যাগ করতে পারে না?
কারণ হলো তারা গাফেল । তাদের সময় জ্ঞান নেই । আপনি যদি সত্যি আপনার চেতনার গভীরে সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন , তাহলে আশা করি এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
নির্ঘুম রাত্রি যাপনের সমাধান:
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঘুমের সাইকেল শেষ হওয়ার তো দূরের কথা, সারারাত নির্ঘুম রাত্রি যাপন করেন অনেকে।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য ছয় ঘন্টার বেশি ঘুমানো যেমন অপ্রয়োজনীয়, , আবার নির্ঘুম রাত্রি যাপনও তার জন্য বিপজ্জনক।
তাহলে এই যে, যাদের সারারাত ঘুম আসে না, তাদের যেকোনো মূল্যে ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে। অনেকে ঘুমের ওষুধ খান। আবার অনেকে বিভিন্ন কিছু সেবন করে রাত্রি জাগার চেষ্টা করেন। কোনটাই স্থায়ী সমাধান নয়।
আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহতালা, মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য রাত জাগার ব্যবস্থা করবেন , এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। সমস্ত সৃষ্টিকুলের জন্য তিনি নিয়ম করে দিয়েছেন। কোরআনের ভাষায় সেটি হল সুন্নতুল্লাহ। এবং আল্লাহ তায়ালা এই সুন্নাতের কোন ব্যতিক্রম করেন না।
এই আলোচনা থেকে বোঝা গেল যে, যারা রাতে ঘুমাতে পারছেন না, তারা সৃষ্টির নিয়মের ব্যতিক্রম করেছেন।
হয়তো,
আপনি টেনশন করছেন ( যা ঈমান পরিপন্থী )। অথবা
নেশাগ্রস্ত হচ্ছেন। অথবা
সারারাত জেগে প্রেমিকার সাথে কথা বলছেন। অথবা
মনটা আল্লাহ তায়ালার প্রতি নিবেদিত নয়।
যদি কোন ব্যক্তি তার মনকে সৃষ্টিকর্তার প্রতি ধ্যানমগ্ন করতে পারে, তার দ্বারা অবশ্যই রাতে ঘুমানো সম্ভব।
প্রশান্তিময় ঘুমের জন্য করনীয়ঃ
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ঘুমানোর আগে ওযু করে একগ্লাস কুসুম গরম পানি পান করে, হাতে একটা তসবি নিয়ে ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়তে পারেন, আর আল্লাহর যেকোনো নাম তসবিহ ধরে জপতে পারেন, আমার বিশ্বাস ১০০ পর্যন্ত যেতে পারবেন না। আগেই ঘুম চলে আসবে।
তাহলে বন্ধু আর দেরী কেন ? আজ থেকেই শুরু করে দেই।
কেননা সময় এবং নদীর স্রোত কারোও জন্য অপেক্ষা করে না। লালন সাঁই এর কথা দিয়ে শেষ করতে চাই আজকের লেখা,
সময় গেলে সাধন হবে না।
0 Comments