ঘুম থেকে উঠে কোন কাজগুলো আগে করা উচিত?

 

ঘুম থেকে উঠে কোন কাজগুলো আগে করা উচিত?

ঘুম থেকে উঠে আগে যে কাজগুলো করা‍‍ উচিত চলুন সেগুলো একটু আলোচনা করা যাক:

১। এক লাফ দিয়ে না ওঠা:

অনেকেই আমরা ঘুম থেকে জেগে লাফ দিয়ে উঠে যাই । এটা ঠিক না । কারণ সারারাত আমরা শুয়ে ঘুমিয়েছি । মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ এবং স্নায়ুবিক কাজগুলো সঠিকভাবে চালু হওয়া পর্যন্ত আমাদের একটু অপেক্ষা করা দরকার।

২। কমপক্ষে এক /দুই গ্লাস পানি পান করাঃ

 কমপক্ষে এক /দুই গ্লাস পানি পান করা উচিত। কেননা আমাদের দেহের শতকরা 70 ভাগই পানি। সারারাত দেহের কোষগুলি অভুক্ত ছিল। আর কোষের প্রধান খাবার দেহে আগে দেওয়া প্রয়োজন।

৩। প্রার্থনা ও ধ্যানঃ

এবার স্ব স্ব ধর্মমতে প্রার্থনায় বসতে হবে। চোখ বন্ধ করে  প্রার্থনা ও ধ্যান ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের জন্য আমাদেরকে তৈরী করে।

৪। ভোরের নির্মল বায়ু সেবনঃ

দেহের আরেকটি প্রধান খাবার হল অক্সিজেন । খোলামেলা জায়গায় বসে ভোরের নির্মল বায়ু সেবন । এটি কিভাবে করতে হয় ? সুন্দর পরিবেশে পদ্মাসনে বসে , চোখ বন্ধ করে দম টানা এবং কিছুক্ষণ ধরে রেখে আবার ছেড়ে দেওয়া । এভাবে কমপক্ষে বিশ বার করতে হয়।

৫। জীবনের আলো সেবনঃ

জীবনের আলো সেবন। যে আলো গাছের পাতার ফাক দিয়ে চিক চিক করতে থাকে , সেটিই হচ্ছে জীবনের আলো । এই জীবনের আলো মানুষের আয়ু বাড়িয়ে দেয়। এটার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে । আমি পূর্বপুরুষদের কে দেখেছি তারা ফজরের নামাজ পড়ে এই ভোরের আলোতে বসে গুড়-মুড়ি খেতেন। অথবা কয়জনে মিলে জমিয়ে গল্প করতেন । তারা ছিলেন দীর্ঘজীবী। ১০০ বছর বা  ১২০ বছর তারা জীবিত ছিলেন।

৬। কুষ্ঠ পরিষ্কার করাঃ

কুষ্ঠ পরিষ্কার করা অর্থাৎ মলমূত্র ত্যাগ করা। আমাদের অনেকেরই নিয়মিত পেট পেট পরিষ্কার হয় না অনেকে টয়লেটে বসে বিড়ি টেনেও পেট পরিষ্কার করতে পারেন না। এর একমাত্র কারণ হলো, অনিয়মিত নিদ্রা। আমরা যখন ঘুমাতে যাই,  তখন আমাদের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সক্রিয় হয় এবং রেচন - নিঃসরণ প্রক্রিয়া ঠিকভাবে কাজ করে। আমাদের পূর্বপুরুষ দেন এশার নামাজ পরেই ঘুমিয়ে যেতেন তাদের তৃপ্তির ঘুম হওয়ার কারণে ভোরে জঙ্গলের পাশে বসতেন,  আর উঠতেন। কারণ বেশি সময় বসে থাকা ছিল তখন লজ্জার ব্যাপার। এইরকম আধুনিক টয়লেট ছিল না যে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা বসে মলত্যাগ করবে। অথচ বর্তমানে সারারাত ফেসবুক এবং নানান ধরনের মিডিয়া উপভোগ করে , অনিয়মিত ঘুমের কারণে এত বিলাসবহুল টয়লেটে  ঘন্টার পর ঘণ্টা বসেও পেট পরিষ্কার হয় না।

৭। দিবসের প্রধান খাওয়াঃ

দিবসের প্রধান খাওয়া সেরে নিতে হবে সকাল বেলার নাস্তার সাথে। চাইনিজ প্রবাদ আছে,  সকালবেলা রাজার খাবার , দুপুরবেলা প্রজার খাবার এবং রাতের বেলা ফকিরের খাবার।

বলুনতো কারা বেশি স্বাস্থ্যবান, সুঠাম দেহের অধিকারী এবং  দীর্ঘজীবী ? 

 আমরা না চীন দেশের লোকেরা?

আমাদের খাবার হল উল্টা।  সকালবেলা ফকিরের খাবার , দুপুর বেলা প্রজার খাবার আর রাতের বেলা হল  রাজার খাবার। রাতের বেলা রাজার খাবার খেয়ে পেটকে ঢোল বানিয়ে এমন ভাবে আমরা ঘুমাই,  আমাদের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। অচিরেই প্রত্যেকটা লোক বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে যাই । মেদভুঁড়ি বেড়ে যায়,  উচ্চ রক্তচাপ ও নানান স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়।

 এই আলোচনা থেকে আমরা যদি ভোর বেলার কাজের কিছুটা হলেও দিক নির্দেশনা  পেয়ে থাকি তাহলেই এই আলোচনা স্বার্থক বলে বিবেচিত হবে ।

Post a Comment

0 Comments