প্রথমত ব্যক্তিত্ব কথাটি কি বোঝায় সেটা আগে বুঝতে হবে।
প্রতিটি মানুষ একটি প্রতিচ্ছবি তৈরি করে সমাজের বেড়ে ওঠে ।
ধরুন একটা ব্যক্তি সকালে এক কথা বলে, আবার বিকালে আরেক কথা বলে। তাকে নিশ্চয়ই আমরা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ বলি না । তাকে আমরা হয়তো বলি একটি ফালতু লোক।
কাকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ বলা যায় ?
তাহলে বোঝা গেল একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হল একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিচ্ছবি যা স্থির থাকে। সাধারণত পরিবর্তন হয় না।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর সিরাত থেকে দেখতে পাই , নবুয়তের ঘোষণার পূর্বেই তিনি একটি ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছিলেন । তার বিরুধীরাও তাকে আলামিন বলে জানত। উনার এই ব্যক্তিত্ব টি কখনো পরিবর্তন হতে আমরা দেখিনি।
তাহলে বোঝা গেল একটি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বও হতে পারে আবার একটি ফালতু ব্যক্তিত্বও হতে পারে। এই দুই ধরনের ব্যক্তিত্বই দীর্ঘদিনের কর্মের একটি ফলাফল।
আজকের আলোচ্য বিষয় হল একটি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
সারা জীবন সুকর্ম দিয়ে সৎ ব্যক্তিত্ব গঠন করা যায়। আর সারা জীবন কুকর্ম দিয়ে ফালতু ব্যক্তিত্ব তৈরি করা যায় ।এখন আমি কি ধরনের ব্যক্তিত্বের অধিকারী হব সেটার উপরে ডিপেন্ড করে আমি কি কি কাজগুলো করব। আশা করি উত্তরটি পেয়েছেন।
ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ কিভাবে তৈরি হয় ?
১। সৎ কর্ম করাঃ
ধরুন আপনি সাদা ধবধবে একটি জামা পরিধান করেছেন। কিন্তু পকেটে একটু দাগ। মানুষ কিন্তু ধবধবে জামাটি দেখে না। ঐ কাল দাগটাই দেখে।
আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠনটাও কিন্তু এরকম। সারাজীবন সৎকর্ম করেছেন, কিন্তু বাড়ী করেছেন ঘুষের টাকা দিয়ে। মানুষ কিন্তু আপনার সৎকর্মটি আর দেখবেনা।
২। ফালতুমি পরিহার করাঃ
অর্থাৎ আপনাকে এক কথার মানুষ হইতে হবে। সকালে এক কথা, আবার বিকালে অন্য কথা একটি গ্রহনযোগ্য ব্যাক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য হইতে পারেনা। কোন অবস্থায়ই কথার বরখেলাফ হবেনা।
৩। ওয়াদা ভঙ্গ না করাঃ
যদি আমরা ওয়াদা খেলাফ করি তাহলে মুনাফিকের খাতায় নাম চলে যাবে।
সবসময় একজন সকাল ৯টায় সময় নির্ধারন থাকলেও সকাল ১০ টায় হাজির হন। এভাবে তার ব্যক্তিত্বে নেতিবাচক দিকগুলো ফুটে উঠে।
আবার হয়তো সোমবারে টাকা শোধ করার কথা, কিন্তু সোমবারে উনার মোবাইল বন্ধ। মানুষ তখন বুঝতেই পারবে আপনার ব্যক্তিত্ব কেমন।
এক্ষেত্র সে সমাজের কাছে একটি ফালতু ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি তৈরি করে।
৪। বাহ্যিক সৌন্দর্যঃ
মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী। আমরা মাঝে মাঝে বলি উনি খুব সৌখিন লোক। পোশাক পরিচ্ছদ চলনে বলনে উনি সবসময় মার্জিত রুচিবোধ নিয়ে চলেন। এতে সমাজের চোখে একটি সুন্দর ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার প্রতিচ্ছবি তৈরি হয়।
পোশাক দেখে অনেক কিছুই বোঝা যায়। ধরুন একজন পুরুষ মানুষের হাতে বলা, কানে দুল , লম্বা লম্বা চুল, পট্টি দেওয়া প্যান্ট, উগ্র কথাবার্তা ; দেখেই বোঝা যায় উনি কোন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। মানুষ তাকে একটি নেতিবাচক চিন্তাভাবনার প্রতিচ্ছবি হিসাবেই দেখে।
বড় কথা হল সর্বপ্রথম নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি সুন্দর ব্যক্তিদের অধিকারী হতে চান, নাকি নিজেকে অসুন্দর ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চান। যদি সত্যি সুন্দর ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাহলে মনে মনে একটি সুন্দর ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি কল্পনা করতে হবে এবং সারা জীবন সাধনা করে ওটার উপর স্থির থাকতে হবে।
0 Comments