কোন বিষয়ে কিভাবে Passion বা আসক্তি তৈরী করা যায় ?

 পড়তে ইচ্ছেই করে না। এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আপনার পরিবার বা প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা ইতিমধ্যে ছাত্রজীবন শেষ করেছেন, জিজ্ঞাস করে দেখবেন তাদের কারোই পড়তে তেমন ইচ্ছা করতো না। কারো কম বা কারোও বেশী। কিন্তু সমষ্যাটা সবারই ছিল।

তাহলে তারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেন পড়েছিল ?

উত্তর একেবারেই সোজা। একটি ভালো চাকুরী, বিয়ে অথবা সামাজিক অবস্থান। ভেবে দেখুন আপনি সামাজিক প্রতিষ্ঠা চান কিনা । একটা ভালো সর্টিফিকেট মানে সামাজিক সম্মান, ভালো চাকুরী এবং ভালো পরিবারে বিয়ে।

যদি আপনার এধরনের কোন চাওয়া না থাকে, তাহলে কষ্ট করে কেন পড়বেন ?

প্রথমেই বুঝতে হবে Passion শব্দটি দিয়ে প্রকৃত অর্থে কি বুঝায় । এটি দিয়ে বুঝানো হয় কোন কিছুর প্রতি প্রবল আগ্রহ তৈরী হওয়া। অন্য কথায় ঐবিষয়ের প্রতি একেবারে নেশাগ্রস্থ হয়ে পরা।

কোন বিষয়ে কিভাবে  Passion বা আসক্তি তৈরী করা যায় ?

একটি উদাহরন থেকেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়ঃ


আমাদের জীবনে রান্না করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত ধরুন কোন এক ভদ্রমহিলা চুলায় তরকারী বসিয়ে জি বাংলায় সিরিয়ল দেখছে। কেউ এসে বলল, তরকারী পুড়ে যাচ্ছে। উনার কিন্তু সেদিকে কোন খেয়াল নেই। উনি আপনমনে সিরিয়াল দেখেই যাচ্ছেন। তাহলে আমরা বলতে পারি যে, This lady is passionate to G Bangla. 


উনার মধ্যে এইযে গভীর নেশাগ্রস্থ ভাব তৈরী হয়েছে, এটাই  Passion. আমরা যদি কোন প্রোডাক্টিভ খাতে এই  Passion তৈরী করতে পারি, তাহলে আমাদের সফলতা নিশ্চিত।


 তাহলে চলুন দেখি কিভাবে তার মধ্যে এই   Passion  তৈরী হল।


১। উপলব্ধিঃ


লক্ষ্য করুন,  কিছুদিন জি বাংলা দেখার পর নাটকের সমস্থ চরিত্রগুলিন সাথে তার পরিচয় ঘটে ,  কাহিনী বুঝার পর সেও নিজেকে চরিত্রগুলির সাথে মানসিক ভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। ফলে তার মধ্যে একটি ভাললাগা তৈরী হয়।


২। ভাল লাগাঃ


লক্ষ্য করুন, ঐ ভদ্রমহিলা প্রথম যেদিন জি বাংলা দেখেছিলেন, ওনার মধ্যে তেমন কোন অনুভূতি কাজ করেনি। কিন্তু কিছুদিন দেখার পর ওনার মধ্যে যে ভাললাগা তৈরী হয়, এর পিছনে কি কারণ থাকতে পারে ? সেটি হল উপরব্ধি। তার মধ্যে কারো কারো জন্য হাসি , কান্না বা ভালবাসা তৈরী হয়ে যায়। এর পর শুরু হয় আসল কাহিনী। সেটাই হলঃ


৩। Passion বা আসক্তিঃ


এবার শয়নে স্বপনে এই কাহিনী তার মনে অনুরনিত হয়, সে সর্বদা অপেক্ষায় থাকে পরবর্তীতে কি হবে। তার পরে কি, তার পরে কি ? সারাক্ষন এই জল্পনা।


ফলাফলঃ


তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম, যেকোন বিষয়ে মানুষের একদিনে Passion তৈরী হয় না। ধরুন আপনি একটা মেয়েকে ভালবাসেন, আপনার ভালবাসা উপলব্ধির স্তর থেকে আসক্তি স্তরে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত্য আপনি মেয়েকে পাওয়ার জন্য বেপরোয়া হবেন না।


আবার ধরুন একজন ছাত্র হজারো চেষ্টা করে পড়ালেখায় মন বসাতে পারছে না। তারও কিন্তু একই সমষ্যা। সে যদি দীর্ঘ সময় পড়ালেখার সাথে লেগে থাকেলে একসময় তার ভিতরে লেখাপড়ার উপলব্ধি তৈরী হবে। তৈরী হবে ভাললাগা এবং পরিশেষে  Passion বা আসক্তি।


এজন্যই দেখা যায় অনেক ছাত্র গভীর রাত অব্ধি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে, অভিবাবক বলছে শুয়ে পড়তে, কিন্তু সে কিছুতেই শুনছে না। তার অর্থ হল,  He is passionate to studies.


অন্যদিকে যার মধ্যে Passion বা আসক্তি তৈরী হয়না তাকে পিটিয়েও পড়ালেখা করানো যায় না।


একজন শিক্ষক হিসাবে বলতে চাই, শিক্ষক-অভিবাবক সবাই মিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে Passion বা আসক্তি তৈরী করুন, দেখবেন পিটানোর প্রয়োজন হবে না।



Post a Comment

0 Comments