উপস্থাপনা একটি আর্ট বা শিল্প । একজন উপস্থাপকই পারে শ্রোতাদের মন জয় করতে। জন্মগতভাবেই অনেকে মঞ্চ কাঁপিয়ে বক্তব্য রাখতে পারে। কিন্তু উপস্থাপনার নিয়ম জানলে যেকোন মানুষ নিজেকে জনসমক্ষে তুলে ধরতে পারে।
একজন উপস্থাপকের ১ম যে গুণটি থাকা আবশ্যক
তা হচ্ছে তার বাহ্যিক দর্শনীয় দিক। কারন হিসাবে আমাদের দেশের শ্রোতারা বলে থাকে , প্রথমে দর্শনধারী , তার পরে গুণবিচারী। এক্ষেত্রে তার থাকতে হবেঃ
১। পোষাকের রং-
এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারনতঃ এক্ষত্রে অফিসিয়াল রং বিবেচ্য। অর্থাৎ পরিস্কার এবং হালকা রংএর পোষাকই অফিসিয়াল রং হিসাবে ধরা হয়।কড়া লাল বা কাল রং সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য।
২। চুলের কাটিং-
চুল-দাড়ি কেটে-ছেঁটে মধ্যমাকৃতি করে ফেলতে হবে, যাতে লম্বা চুল দেখে শ্রোতারা ভয় না পায়। লম্বাচুল খোঁচা খোঁচা দাড়ি দেখে শ্রোতারা ভাবনায় পড়ে যাবে হয়ত লোকটি প্রেমে ব্যর্থ অথবা পদ্মায় বড়িঘর ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। আর ইসলামী ব্যাক্তিত্ব হলে গুণগত মানসম্পন্ন টুপি পাঞ্জাবী পরিধান করতে হবে।
৩। কালিকরা জুতা-
অবশ্যই এতক্ষন যে পোশাক নিয়ে আলোচনা হল তার সাথে কালি করা জুতা না থাকলে একবারেই বেমানান। এক্ষেত্রে পোশাকের গাম্ভর্যতা বুঝে কখনো জুতা বা কখনো সেণ্ডেল পরিধান করা যেতে পারে।
দ্বিতীয় বিষয়টি হল কথা বলার ধরন।
১। পরিস্কার আওয়াজ-
একজন আদর্শ বক্তার আওয়াজ পরিস্কার হইতে হবে। পরিস্কার আওয়াজের কারনেই শ্রোতারা বিমোহিত হয়, মন্ত্রমুগ্ধের মত বক্তব্য শোনে তাদের দেহমন পুলকিত হয়। একসময় তারা তার ভক্ত হয়ে পরে।
২। হাসিমাখামুখ-
চোখবন্ধ করে গোমড়ামুখে এক বক্তা কথা বলতেছিলেন। হঠাৎ চোখ খুলে দেখেন সকল শ্রোতা চলে গিয়েছে। শুধু একজন ব্যক্তি তার সামনে বসা ছিল। বক্তা জিজ্ঞাস করলে সে বলেছিল বক্তব্য শোনার জন্য নয় বরং যে কম্বলে বসে বক্তব্য রাখা হয়েছিল , সেই কম্বল ওেয়ার জন্যই সে বসেছিল। তাহলে দেখুন একজন বক্তার জন্য হাসিমুখ কতটা জরুরী।
৩। সঠিক উচ্চারন ও শব্দ চয়ণ-
শ্রোতাদের অধিকাংশই বর্তমানে শিক্ষিত। আপনি যদি বলেন , কালারা বাড়ী গিয়া কাসির গোসত দিয়া কায়া আইছি। শ্রোতারা নির্ঘাত হাসবে। তাছাড়া শ্রোকাদের মনে আঘাত লাগতে পারে এমন শব্দ এড়িয়ে চলা উচিৎ।
৪। সরস বক্তব্য-
সর্বোপরি কিছু গল্প, কিছু উপমা, কিছু কৌতুক দিয়ে বক্তব্যকে সরস করে তুলতে হবে। অকথ্য ভাষা কখনও ব্যবহার করা যাবে না। কথার মালা বুনতে হবে ধারাবাহিকভাবে। নিজেই প্রশ্ন করে নিজেই উত্তর দিতে হবে। আর বিশেষকরে শ্রোতাদেরকে দৃষ্টিবদ্ধ করে রাখতে হবে। নিজের অঙ্গভঙ্গি অবশ্যই দৃষ্টিনন্দন হওয়া উচিৎ।
0 Comments