অলসতা দূর করার উপায় কী?

প্রথম কথা হল অলসতা বিষয়টি আসলে কি সেটাই আগে বুঝতে হবে। কোন এক ছাত্রকে প্রশ্ন করা হলো, তুমি ঘুম থেকে কখন জাগ্রত হও ? উত্তরে সে বলল, সূর্যের আলো মুখে পড়লেই জেগে উঠি। শিক্ষক বললেন তাহলে তো তুমি খুবই কর্মঠ। ছাত্রটি বলল না স্যার, আমাদের জানালা বাসার পশ্চিম দিকে। 

এই ছাত্রের দৃষ্টিতে বিকাল বেলা ঘুম থেকে জাগ্রত হলেও এটা যে অলসতা তার কিন্তু বোধগম্য নয়।

অলসতা দূর করার উপায় কী?

চলুন ২ টি পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করা যাক।


পর্যবেক্ষণ ১:


কোন এক ভদ্রলোক প্রতিদিন ঘুম থেকে বিলম্বে জাগ্রত হন। একবার তিনি বিমানের টিকেট কাটলেন এবং তার ফ্লাইট ছিল সকাল ছয়টা। সেদিন কিন্তু তিনি বিলম্বে জাগ্রত হয়নি বরং ভোর চারটার সময় উনি বিমানবন্দরে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন।


পর্যবেক্ষণ ২:


কোন এক ছাত্র প্রতিদিন তার কাজ নিয়ে অলসতা করে। কখনো সে দিনের কাজ দিনে শেষ করতে পারেনা। কিন্তু যখনই এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হলো, সে তখন সিলেবাস শেষ করার জন্য উঠে পড়ে লাগলো। সারাদিন সারারাত শুধু পড়ালেখা। অভিভাবকগন তার স্বাস্থ্যহানি চিন্তা করে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে কিন্তু কোন অলসতা করছে না।

উপরোক্ত দুটি পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, অলসতা দূর করার মূল মন্ত্র হলো টাইম এন্ড টার্গেট।

আমি কোন কাজ করব এই ভেবে দিনের পর দিন পার করছি কিন্তু আমার কাজটি হচ্ছে না । কেন হচ্ছে না চলুন বাস্তবে আরো কয়েকটি উদাহরণ বিশ্লেষণ করি,


উদাহরণ ১: 


ধরুণ সারা পৃথিবীর যুবক বিয়ে করতে চায়, তাদের মনে বিয়ে করার একটা বাসনা সব সময় বিরাজমান, লক্ষ্য করুন তারা কিন্তু বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লাগেনি। কিন্তু  যেদিন বিয়ের উভয় পক্ষ বসে দিনক্ষণ নির্ধারণ করল, এর পরের দিন থেকে শুরু হয়ে গেল কর্মব্যস্ততা । কেউ শাড়ি কিনছে, কেউ গহনা কিনছে, কেউ কার্ড তৈরি করছে, যাবতীয় আয়োজন করার জন্য অলসতা পরিহার করে সবাই উঠে পড়ে লেগেছে।


উদাহরণ ২: 


বিশ্বের চমৎকার একটি সমুদ্র সৈকত থাইল্যান্ডের পাতাইয়া । পৃথিবীর ভ্রমণবিলাসী সকল মানুষ সেখানে যেতে চায়। কিন্তু কেউ কি বিমানের টিকিট কেটেছে?  ভিসার জন্য আবেদন করেছে?  লাগেজ প্রস্তুত করেছে?নিশ্চয়ই না। তাদের মধ্যে সেই কর্ম ব্যস্ততা  পরিলক্ষিত হয় না। কিন্তু কোন ব্যক্তি অফিস থেকে ভ্যাকেশন পেয়েছে,  সে দিনক্ষণ ঠিক করেছে । এখন সে উঠে পড়ে লেগেছে কখন ভিসার জন্য যাবে,  কখন টিকিট কাটবে,  কখন লাগেজ গুছাবে , তার কর্ম ব্যস্ততার শেষ নেই ।


তাহলে বন্ধুরা, বিষয়টি পরিষ্কার হলো যে,  জীবনের অলসতা দূর করে কর্ম চঞ্চলতা ফিরিয়ে আনতে হলে কোন একটা কাজের সময় বা দিনক্ষণ নির্ধারণ করলেই কেবল মানুষের মধ্যে অলসতা দূর হবে। তাদের জীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এবং সাথে সাথে যখন সফলতা চলে আসবে, জীবন তখন হবে হাসিখুশি আনন্দময়।

Post a Comment

0 Comments