ব্যক্তিগত উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে নিজেকে কিভাবে স্মার্ট হিসাবে গড়ে তুলবেন।

সাধারণত স্মার্ট বলতে আমরা বুঝি , খুব চমৎকার পোশাক পরিহিত ফ্যাশনেবল কোন ব্যক্তি। কিন্তু আসলে স্মার্ট বলতে তা বোঝায় না। প্রকৃত অর্থে  শিক্ষিত মার্জিত এবং অত্যন্ত সচেতন ব্যক্তিকেই স্মার্ট বলা যায়। এমন অনেক মানুষ আছে আপনাকে যদি এক কাপ চা দেন, একফোঁটা হলেও পড়বে। বন্ধু আপনি কি সত্যি স্মার্ট হতে চান ? 



ব্যক্তিগত উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে নিজেকে কিভাবে স্মার্ট হিসাবে গড়ে তুলবেন।

তাহলে আপনাকে প্রতিটি কাজে-কর্মে নিপুন হওয়া প্রয়োজন।প্রতি মুহূর্তে আপনাকে সচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম যা আপনাকে সচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে:



১। দৈনন্দিন জীবন শুরুঃ


আপনার দৈনন্দিন জীবন শুরুই করতে হবে প্রত্যুশে ফজরের পর পরই। কেননা গুরুজনরা শিখিয়েছেন,  ‘Early to bed and early to rise, makes a man healthy ,wealthy and wise.’


২। নতুন কিছু শিখাঃ


অর্থনৈতিক  কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখার অভ্যাস করতে হবে, তাহলে আপনার চিন্তার দিগন্ত প্রসারিত হবে। 


৩। আরেকটু ভালো করার চেষ্টাঃ


গতকালের চেয়ে আজকের দিনটিতে সকল কাজে আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করুন।এতে আপনার দক্ষতার উন্নয়ন হবে। 


৪। নিত্য নতুন প্রযুক্তিঃ


দেশ-বিদেশের সমসাময়িক লেখকদের বই সংগ্রহ করে পড়তে পারেন, ফলে আপনি বর্তমান পৃথিবীর মানুষের চিন্তাধারা এবং নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কৌশল জেনে আপনি সব সময় এগিয়ে থাকবেন।


৫। বিনোদনঃ


বিনোদনের জন্য কোন বিষয়টি বেছে নেবেন সেটি আপনার স্মার্টনেসের বহিঃপ্রকাশ। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি সর্বদা টিভি সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে আপনার ব্রেনের ক্রিয়েটিভ সেলগুলো মারা যাবে।সেক্ষেত্রে আপনার ক্রিটিভিটি যতে ঠিক রাখার জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন কাটুন ছবি। এটি একটি নিরেট  বিনোদন। এখানে আপনি শুধুই বিনোদন পাবেন এবং ব্রেইন রিফ্রেশ হবে। তবে বিনোদনের জন্য আপনার ওয়ার্কিং আওয়ারের মধ্যে ১ ঘন্টা বেছে নিতে পারেন, এর বেশী না। মাত্রাতিরিক্ত বিনোদন আপনার ব্রেইনকে উদাসীন করে দিবে।   


৬। ওয়েবসাইট বাছাইঃ


জ্ঞান অর্জনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন চমৎকার ওয়েবসাইটগুলোতে। এগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করলে আপনি বিজ্ঞান সমাজ সভ্যতা নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট বাছাই করা সুনিপুণ হওয়া দরকার।


৭। নিয়মিত প্রশিক্ষণঃ


জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আপনার পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট হয়েছে যেখান থেকে আপনি নিয়মিত প্রশিক্ষণ  নিতে পারেন।


৮। শিক্ষার কৌশলঃ


শিক্ষার একটি কৌশল হলো I hear, I forget. 
                                           I see, I remember. and 
                               I do, I learn.
 -----তাই যা শিখলেন একটা ডায়েরি তে লিখুন এবং বাস্তবায়ন করুন।


৯। স্মার্ট লুকঃ


নিজেকে স্মার্ট হতে হলে প্রথম শর্তই হলো স্মার্ট লুক। আমরা যদি শারীরিক-মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ না থাকি,  কখনোই আমাদেরকে স্মার্ট দেখাবে না। শারিরীক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন,  মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য হলো সকল কাজে আল্লাহর নাম স্মরণ করা। এতে প্রতিনিয়ত মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

১০। ইতিবাচক চিন্তাভাবনাঃ


যারা সব সময় ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করে তাদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন এবং নেতিবাচক চিন্তার মানুষগুলিকে এড়িয়ে চলুন।


১১। সফল ব্যক্তির সঙ্গলাভঃ


আপনার চেয়ে জ্ঞানী এবং সফল ব্যক্তির সঙ্গলাভ করুন।কেননা, কোন এক ফার্সী কবি লিখেছেন, “সোহবতে সালেহ তোরা সালেহ কুনাদ, সোহবতে তালেহ তোরা তালেহ কুনাদ।” অর্থাৎ সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।


১২। দেশ-বিদেশে ভ্রমনঃ


মাঝে মাঝে নিজের গণ্ডি পেরিয়ে একটু  ঘুরে আসা যেতে পারে মনের মানুষদেরকে নিয়ে।আমাদের কর্মব্যস্ত  জিবনের একঘেঁয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হতে পারে দেশ-বিদেশে ভ্রমন। 


১৩। পরিশ্রমী হওয়াঃ


নিজেকে খুব পরিশ্রমী করে গড়ে তুলতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, মানুষকে কষ্টের মাঝে সৃজন করা হয়েছে।

লাকাদ খালাকনাল ইনসানা ফি কাবাদ ।
অর্থ: নিশ্চয়ই মানুষকে(ইনসানকে)কষ্টের সহিত (রুপান্তর) সৃষ্টি করা হয়েছে । (সূরা বালাদ, আয়াত-৪)।

১৪। সারাদিনের কাজের মূল্যায়নঃ


রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই সারাদিনের কাজের মূল্যায়ন করে আত্ম সমালোচনা করে  আল্লাহর সাহায্য  চেয়ে ঘুমাতে হবে। ঘুমানোর আগে অবশ্যই পরের দিনের কর্ম পরিকল্পনা করে নোট বুক এ লিখে নিতে হবে।

সত্যিকারের সফল ব্যক্তি অবশ্যই ধার্মিক হবেন। আত্মবিশ্বাস, বিনয় ও ধৈর্য হচ্ছে তাঁর সফলতার অলংকার।



Post a Comment

0 Comments